• জন্মদিন-জন্মরাত


    আজকের রাতের আবহাওয়া বড়ই উত্তপ্ত। বিছানার সাথে কোনভাবেই শান্তি করিয়া পিঠ লাগানো যাইতেছেনা । এপাশ ওপাশ করিয়াই কাটিয়া যাচ্ছে, এভাবেই বুঝি বাকি রাতটাও কাটিবে। 

    ঘুমের দেখা মিলিতেছেনা।  একখানা ঘুমের ঔষধ গিলিয়া ইউটিউবে অডিওবুক প্লে করিয়া কানে এয়ারফোন গুজে চোখ বন্ধ করিয়া  শুইয়া  রইলাম ।  নাহ, লাভ হইতেছেনা। কেমন যেন একখানা অস্বস্তি ভাব  সারা শরীরে। 

    উঠিয়া গিয়া বারান্দা ঘেষিয়া  দাড়াইলাম। পরক্ষনেই আকাশ পাতাল তফাত বুঝিতে পারিলাম  । ঘরের ভিতর এতটাই গরম, অথচ এই বারান্দাটায় দাড়াইলেই মনে হয় কেউ বুঝি প্রকৃতিতে  সেন্ট্রাল এসি লাগাইয়া  দিয়াছে। বোনাস হিসেবে পাগলাটে বাতাস তো আছেই। 

    খুব করিয়া একখানা  সিগারেট এর এখন দরকার ছিল। বারান্দায় দাড়াইয়া এমন আবহাওয়াতে সিগারেট ফুকিতে ফুকিতে রাত্রী দেখিবার অন্যরকম একটা অনুভূতি রইয়াছে । পাশেই এখখানা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীর নিচে  নৈশ প্রহরী ফ্যাক্টরির গেটের ভিতরে থেকেই হাটাহাটি করে ঘুরপাক খাইতেছে অনবরত। আজকে তার রাতের খাবারের মেনু নির্ঘাত জম্পেশ ধরনের ছিল বোধ করি ।হাটিয়া হজম করিয়া নিচ্ছে। ফ্যাক্টরির সিঁড়িতে দেখিলাম  দুই জন মানব গামছা বিছাইয়া শুইয়ে রইয়াছে।  তাহাদের মধ্যে একজনের পা দেখা যাইতেছে শুধু। আরেকজনকে নিবিরভাবে পর্যবেক্ষন করিবার চেষ্টা চালাইলাম । পরনে ফরমাল প্যান্ট, স্যান্টু গেঞ্জির সাথে ইন করা। কিছুক্ষন পর পর উঠিয়া মোবাইলে কি যেন দেখিয়া আবার মোবাইল টা পাশে রাখিয়া এক হাত চোখের উপর দিইয়া শুইয়া রইলেন। নাহ! ইহাদের কর্মকান্ড দেখিয়া আর এই আবহটা নষ্ট করিবার মানে হয়না।

    আচ্ছা , কোন একদিন যদি রাত্তিরে গিয়ে দাড়াইয়া বলি, "আমার থাকবার কোথাও কোন জায়গা নাই। দয়া করে সিড়ির ওখানে একটা রাত থাকতে দেবেন? আমি ভোরের আগেই আবার চলে যাবো। " আমার অনুমান বলিতেছে প্রথমে কিছুক্ষন সিকিউরিটি গার্ডটি "বহিরাগতদের প্রবেশ এবং সিকিউরিটি গার্ড হিসাবে তাহার দ্বায়িত্ববোধ" - ইহার উপর প্রবন্ধ তিনি আমাকে শোনাইবেন । যখনই দেখিবেন আমি কিছু পয়সা তাহাকে দেবার পায়তারা আরম্ভ করিয়াছি তৎক্ষনাৎ গলিয়া মোম হইয়ে যাইবেন। টাকা দিয়া আজকালকার যুগে মুখের বানী কিনিয়া লওয়া যায়। অন্যদিকে, একজন মানব যত বেশি নিম্নপেশার হয়, তাহাদের কথা ততটাই উচ্চমানসম্পন্ন হইয়া থাকে সচারচর। পেশা এবং জীবনযাত্রার উপর তাহা নির্ভর করে।  আমার জীবনের ইহা খুব নিবির একটা উপলব্ধী বলা যায়। তাহাদের কথা শুনিয়া মনে হইবে, এইতো সেদিন ই কোন এক মন্ত্রীর সাথে নৈশভোজের দাওয়াত পাইয়াছেন কিন্তু আত্মসম্মানবোধ এর দরুন তিনি সেখানে উপস্থিত হন নাই।

    আচ্ছা, কল্পনায় একখানা সিগারেট ধরাইলে কেমন হয়?

    না থাক।

    আজকের সিগারেট টা বরং তোলা থাক। 

    গতকাল নৈশকালে স্বপ্ন দেখিয়াছি , একটি খুব অপ্সরী গোছের মেয়ে আমার পাশে আসিয়া বসিয়াছে। এত সুন্দর মেয়ে আমি আগে কোথাও দেখিয়াছি বলে মনে পড়েনা। মেয়েটি অনেক মায়াভরা কন্ঠেই আমার দিকে নিজের হাত বাড়াইয়া দিল, এরপর বলিল, "আপনার হাত টা দিন" । আমি অনেকটা মন্ত্রমুগ্ধ হইয়া আমার ডান হাতখানা তার হাতের মধ্যে দিয়া দিলাম। হঠাতই মেয়েটি সুপারী কাটার শর্তা দিয়া আমার হাতের প্রতিটি আংগুল একটা একটা করিয়া কাটিতে আরম্ভ করিল। আমি ব্যাথায় কোকাইতে কোকাইতে জিজ্ঞাসা করিলাম, "আরে! এইসব কি করছেন আপনি?" উত্তরে মেয়েটি বলিল," একদম চুপ" বলেই খিলখিল করিয়া হাসি শুরু করিল। সারা রুম ভর্তি সেই হাসির শব্দ শোনা গেল মনে হয়। ছেলেমানুষি হাসি । এরপরই ঘুম টা ভাংগিয়া গেল।

    আপাতত নারী বিষয়টার এখানেই ইতি টানিলাম। ঘুমের প্রয়োজন।শরীরের ভেতর থেকে ঘুম বাবু আমায় স্মরন করিয়াছেন।  বিছানায় শরীর টা এলাইয়া দিয়ে ঘুমের প্রস্তুতি লইলাম । দেখি, গতকালের স্বপ্নের বাকী অংশটাকে ধোকা দিয়া কোনরূপ ফিরাইয়া আনা যায় কিনা।

    ও হ্যা,

    শুভ জন্মদিন , শর্তাকুমারী। অনেক ভালোবাসা রইল।

  • 0 Comments:

    Post a Comment

    GET A FREE QUOTE NOW

    Lorem ipsum dolor sit amet, consectetuer adipiscing elit, sed diam nonummy nibh euismod tincidunt ut laoreet dolore magna aliquam erat volutpat.

    Waiting At The Dawn

    Search This Blog

    Blog Archive

    Most Popular

    ADDRESS

    4759, NY 10011 Abia Martin Drive, Huston

    EMAIL

    contact-support@mail.com
    another@mail.com

    TELEPHONE

    +201 478 9800
    +501 478 9800

    MOBILE

    0177 7536213 44,
    017 775362 13